Rise of Mobile Phone Photography, বর্তমানে মোবাইল ফোন হল সব থেকে সেরা ক্যামেরা ডিভাইস, কারণ এটি সবসময় আপনার সাথে থাকে এবং আপনি চাইলেই যে কোন মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি করতে পারেন। মোবাইলে ছবি তোলা বলতে আমরা সাধারণত যা বুঝি পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের ছবি তোলা কিংবা নিজেদের সেলফি নেয়া অথবা কোথাও বেড়াতে গিয়ে ভাল লাগা কোন কিছুর চটজলদি ছবি তুলে ফেলা । তবে বর্তমানে মোবাইল ফটোগ্রাফি তাঁর এই সাধারণ গন্ডি থেকে বেড়িয়ে মান সম্মত ছবি তোলার দিকে গড়িয়েছে। একটি মোবাইল ফোন দিয়ে আপনি সেই সকল অপ্রত্যাশিত মূহুর্তের ছবি ধারণ করতে পারবেন যেখানে হয়ত একজন প্রোফেশনাল ফটোগ্রাফারও নিজেকে অপ্রস্তুত ভাববে।
Cyanotis, Taken by Abdul Momin
যদিও মোবাইলে তোলা ছবি সমূহের কোয়ালিটি ট্রাডিশনাল ক্যামেরা ডিভাইসগুলোর মতো উন্নত না, তবে মেনুফ্যাকচারিং কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত মোবাইল ক্যামেরাকে উন্নত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বাজারে পাওয়া মোবাইলের জন্যে থার্ড পার্টি লেন্স সমূহ মোবাইল ফটোগ্রাফিতে নতুন এক মাত্রা যোগ করেছে। এখন চাইলেই মোবাইল দিয়ে দুরের ছবি তোলা যাচ্ছে আবার অতিব ক্ষুদ্র বস্তুর ছবিও তোলা যাচ্ছে, যা কিনা ট্রাডীশনাল ক্যামেরা ডিভাইসের জন্য অনেক ব্যায়সাপেক্ষ ব্যাপার। আধুনিক মোবাইল ফোন গুলোর আরেকটি ভাল দিক হল, ছবি তোলার পর আপনি মোবাইলেই নানা রকম ফটো প্রসেসিং এপ দিয়ে আপনার ছবিকে মনের মতো করে প্রসেস করতে পারবেন, যেই সুবিধাটি ট্রাডিশনাল ক্যামেরা ডিভাইস গুলোতে প্রায় অনুপস্থিত বলা চলে। এছাড়া তাৎক্ষণিক ভাবে সোস্যাল প্লাটফরমে শেয়ারের সুবিধাতো আছেই।
বর্তমানে মোবাইল ফটোগ্রাফির জন্য বিশ্বের সব থেকে বড় ডেডিকেটেড প্লাটফর্ম হল Instagram. ২০১২ এর শেষ নাগাদ Instagram ব্যবহারকারির সংখ্যা ছিল প্রায় ১০ কোটি এবং এই বিপুল সংখ্যক ব্যাবহারকারী দ্বারা শেয়ারকৃত ছবির পরিমান ছিল প্রায় ১০০ কোটি। এসব ছবির ৯৯.৯৯ শতাংশই মোবাইল ফোন দিয়ে ধারণ করা। আর তখন ফেসবুকে শেয়ারকৃত ছবির সংখ্যা ছিল প্রায় ১৪,০০০ (চৌদ্দ হাজার) কোটি। ছবি শেয়ারিং এর আরেকটি জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হল ফ্লিকার, যেখানে এমেচার থেকে শুরু করে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার পর্যন্ত ছবি শেয়ার করে থাকেন সেখানে সবথেকে জনপ্রিয় ক্যামেরা ডিভাইস হল “iPhone 4s” যা একটি মোবাইল ফোন।
প্রতিদিন প্রায় ২৫ কোটি ছবি ইন্টারনেট এ শেয়ার হয় যার বেশিরভাগই মোবাইল ফোনে তোলা। বিপুল পরিমান এই ছবি মোবাইল ফটোগ্রাফারদের প্রতিনিয়ত ভাল থেকে ভাল ছবি তুলতে অনুপ্রেরণা যোগায়। যদিও মোবাইল ফোনের ছবি কমার্শিয়াল কাজে ব্যাবহার যোগ্য না তবুও কিছু প্রাইভেট এজেন্সি মোবাইল ফটোগ্রাফিকে নিজেদের কাজে লাগাচ্ছে। Foap এরকম একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে আপনি মোবাইলে তোলা ছবি বিক্রি করতে পারবেন এবং লভ্যাংশের 50% আপনাকে দেয়া হবে। এভাবে আপনি এমেচার থেকে মোবাইল ফটোগ্রাফিকে প্রফেশনাল লেভেলে নিয়ে যেতে পারবেন। এছাড়াও প্রতিনিয়ত দেশ বিদেশের বিভিন্ন যায়গায় ফটো Exhibition অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব Exhibition এ অংশগ্রহন করতে পারেন, এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আয়োজিত Photo কনটেস্টে অংশগ্রহন করতে পারেন।
মোবাইল ফটোগ্রাফি একটি ব্যাপক সম্ভাবনাময় শ্রেনী। সময়ের সাথে মোবাইল ফটোগ্রাফির অগ্রগতি ফটোগ্রাফির অন্যান্য শ্রেনী গুলোর থেকে বেশ লক্ষ্যনীয়।