আপনি যদি নিরাপত্তার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে কার্যকর কোন ডিভাইস এর খোঁজে থাকেন, তবে Xiaomi (Yi) Ip Camera হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ। বলতে গেলে এই Ip ক্যামেরা নতুন প্রজন্মের একটি CCTV ক্যামেরা। আমরা জানব কি কারনে আপনি এই Ip ক্যামেরাটিকে ব্যবহার করবেন এবং কেন এটি প্রচলিত CCTV ক্যামেরা কিট এর চাইতে বেশি সাশ্রয়ী।
আসলে, IP ক্যামেরা বা Internet Protocol ক্যামেরা হল এক ধরনের নিরাপত্তার কাজে ব্যবহারযোগ্য বিশেষ ক্যামেরা। যেখানে চিরচলিত অন্যালগ CCTV বা Close Circuit ক্যামেরায় ক্যামেরা থেকে প্রাপ্ত ডাটা পাওয়ার জন্য কেবল কানেকশন/ কম্পিউটার সহ বিভিন্ন আলাদা আলাদা হার্ডওয়্যার ব্যবহার করা হয়,ঠিক সেখানেই IP Camera থেকে প্রাপ্ত ডাটা পাওয়ার জন্য লাগে কেবল ইন্টারনেট সংযোগ। আর সেই কারনে এই IP ক্যামেরা প্রযুক্তি সাশ্রয়ী এবং আরও বেশি কার্যকর।
শাওমি (Yi) আইপি ক্যামেরাঃ
অন্যসবাই যখন প্রচলিত ধারায় উৎপাদনে ব্যাস্ত, শাওমি তখন আনে ভিন্ন কিছু। শাওমি এর স্মার্টফোন থেকে শুরু করে ইন্টারনেট রাউটার, স্পিকার সহ সকল প্রযুক্তি পন্যে মানুষ উপভোগ করতে পরে অন্যরকম প্রযুক্তির ছোয়া, আলাদা একরকম অভিজ্ঞতা। শাওমি আইপি ক্যামেরাও তার বিকল্প নয়।
শাওমি আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে আপনি আপনার বাসা,দোকান, প্রতিষ্ঠান বা যেকোন স্হান এর লাইভ ফুটেজ দেখতে পারবেন MiHome এন্ড্রয়েড বা আইওএস অ্যাপলিকেশন এর মাধ্যমে সরাসরি।
বাসা-বাড়িতেঃ
এই ক্যামেরাটি একজন সচেতন অভিভাবকের তার সন্তানের কার্যবিধি নজরে রাখার জন্য প্রধান হাতিয়ার হতে পারে। কেবল সন্তানের পড়ার/থাকার ঘরের একপাশে একে সেটাপ করে রেখে দিয়ে অভিভাবকগণ যখন খুশি তখন MiHome অ্যাপলিকেশনটি দিয়ে তার সন্তান কি করছে তা পৃথিবীর যেকোন জায়গায় বসে থেকে দেখতে পারবে।আবার কেউ তার পরিবার থেকে অনেক দূরে থাকলেও কেবল এই ছোট্ট আইপি ক্যামেরা দিয়ে সে তার পরিবারকে অনেক নিকটে মনে করতে পারবে।
ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানঃ
অফিস, দোকান বা যেকোন রকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শাওমি আইপি ক্যামেরার ব্যবহার, নিরাপত্তায় এক যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করতে পারে। যেখানে বর্তমানে প্রচলিত CCTV ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে নির্ভর করতে হয় CCTV এর আসে পাশে থাকা কম্পিউটার বা DVR রেকর্ডিং বক্সের ওপর, এতে প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে থাকলে সেখানকার নজরদারি করার কোন সুযোগ থাকে না। অন্যদিকে এই আইপি ক্যামেরার ব্যবহারে অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে যত দূরেই থাকুন না কেন, নজরদারি হবে হাতের স্মার্টফোনেই। আর বন্ধ অফিস বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর ক্ষেত্রে এর মোশন ডিটেকটর ফিচার এর কারনে, চোর বা অন্য কোন ধরনের নড়াচড়া লক্ষ্যনীয় হলে – ক্যামেরাটি স্মার্টফোনে বার্তা পাঠাবে। তখন আপনি MiHome অ্যাপটির মাধ্যমে ফুটেজ সেভ করে পুলিশকে দেখানোর জন্য প্রমান হিসেবেও রাখতে পারবেন এবং তৎক্ষনাত ব্যবস্হা গ্রহন করতে পারবেন।এভাবে শাওমি আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান থাকবে শতভাগ সুরক্ষিত।
বিশেষ আকর্ষনঃ
- আইপি ক্যামেরাটির নিচে থাকা ফোল্ডেবল স্ট্যান্ডটি সম্পূর্ণ ম্যাগনেটিক,যার ফলে যেকেন মেটালিক সারফেসে এটি সহজেই আটকে থাকে।
- আইপি ক্যামেরাটি খুবই কমপ্যাক্ট হাতের মুঠোয় এটে যায়, তাই যেকোন জায়গায় একে সেটাপ করা কোন ব্যাপার না।
- এর নাইট ভিশন মোড, কোন জায়গা অন্ধকার হওয়ার সাথে সাথেই এক্টিভেট হয়ে যায়, এবং অন্ধকারে সম্পূর্ণ ডিটেইলস সহ ফুটেজ ক্যাপচার শুরু হয়।
- বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন এর সাহায্যে রিয়েল টাইম অডিও স্ট্রিমিং, রেকর্ডিং করা সম্ভব ।
- Smoke Sensor থাকার ফলে আগুন বা এরকম কিছু ধোয়া টের পেলে ক্যামেরাটি স্মার্টফোনে বার্তা পাঠাবে ।
বক্সে যা যা থাকেঃ
ডিভাইসটি কেনার পর বক্স খুললে প্রথমেই পাওয়া যাবে আইপি ক্যামেরাটি। তারপর ভিতরে
- একটি লম্বা ইউএসবি ২.০ পাওয়ার কেবল
- একটি সিম্পল পাওয়ার এডাপ্টার পাওয়া যাবে।
যা যা প্রয়োজনঃ
যেহেতু এটি একটি IP (Internet Protocol) ক্যামেরা তাই ‘যেখানে’ আপনি ক্যামেরাটি সেটাপ করবেন সেখানে সর্বক্ষণ ইন্টারনেট সংযোগ এবং তাতে WifI সুবিধা থাকতে হবে।আইপি ক্যামেরাটিকে পাওয়ার ব্যাংক দিয়েও চালানো যাবে আবার এর সাথে বক্সে থাকা এডাপ্টার দিয়েও চালানো যাবে। সর্বক্ষন একে এরকম যেকোন উৎস থেকে পাওয়ার দিতে হবে।
কুইক সেটাপঃ
ক্যামেরাটির সেটাপ করা খুবই সহজ। MiHome অ্যাপটি ডাউনলোড করে তাতে নতুন করে Xiaomi অ্যাকাউন্ট যোগ করতে হবে বা আগের একাউন্ট থাকলে সাইন-ইন করতে হবে। তার ওপরে প্লাস বাটনটি ক্লিক করে Add Device অপশনে চাপ দিতে হবে(বিঃদ্রঃ ফোনের ব্লুটুথ অন থাকতে হবে) এবং তারপর আইপি ক্যামেরার নিচে থাকা সেটাপ বাটনটিকে চাপ দিতে হবে। এতে করে MiHome অটোমেটিক ডিভাইসকে(আইপি ক্যামেরাকে) ডিটেকটেড করে নিবে। তারপর খুবই সহজেই আপনি আপনার Mi IP Camera টিকে MIHome অ্যাপলিকেশন এর সাহায্যে নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন, ফুটেজ ক্যাপচারিং/রেকর্ডিং করতে পারবেন। তবে হ্যা,আইপি ক্যামেরাটিকে সর্বক্ষন ইন্টারনেট তথা Wifi এর অধিনে রাখতে হবে,এর নিচে থাকা এস ডি কার্ড স্লটে এসডিকার্ড প্রবেশ করাতে হবে । ব্যবহারকারীকে MiHome অ্যাপলিকেশন দিয়ে ক্যামেরা নিয়ন্ত্রন করতেও স্মার্টফোনের ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন হবে।
এভাবে সেটাপের পর প্রতিবার কেবল পাওয়ার সংযোগটি খুলে দিলেই ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যাবে। আবার সংযোগ দিলে কমলা ও নীল আলো ব্লিঙ্ক করবে এর মানে পাওয়ার পেয়েছে, তারপর নীল আলো ব্লিঙ্ক করবে এর মানে নেটওয়ার্ক এর সাথে প্রিপেয়ারিং হচ্ছে, তারপর নীল আলো স্টেবল হবে এর মানে ক্যামেরাটি এখন রেডি। তখন MiHome অ্যাপটিতে দেখাবে Device Online।তারপর কেবল MiHome অ্যাপটির ‘Device Online’ লেখা ক্যামেরা টিতে চাপ দিলেই লাইভ ফুটেজ দেখা ও নিয়ন্ত্রন করা যাবে।
পরিশেষেঃ
তো আপনি যদি বাসা বাড়িতে নজর রাখতে অথবা অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর নিরাপত্তায় সত্যিই যত্নশীল হল, তবে আজই সোর্স ওফ প্রোডাক্ট থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে এই শাওমি (Yi) আইপি ক্যামেরাটি সংগ্রহ করে নিন।