Top Action Camera Basic Idea info
সব মানুষই চায় তার জীবনের আনন্দ্দায়ক, উত্তেজনা, রোমাঞ্চকর বা আবেগময়ী স্মৃতিগুলো ধরে রাখতে। এক্ষেত্রে সবাই চায় এই মুহুর্তগুলো ক্যামেরার ফ্রেমে বা ভিডিও ধারন করে করতে। কিন্ত সবসময় তা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। ধরুন আপনি যদি আপনার বাইকিং, হাইকিং, আন্ডারওয়াটার ডাইভিং, হাই হিল সাইকেলিং, স্কাই ডাইভিং ইত্যাদি মূহুর্তগুলো যদি ভিডিও করে রাখতে চান সেটা এমনিতে কোন মোবাইল ক্যামেরা ব্যবহার করে ক্যাপচার করা প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার। এক্ষেত্রে Action Camera একটি অতুলনীয় গ্যাজেট। আজ আমরা অ্যাকশন ক্যাম গ্যাজেট টি নিয়ে আলোচনা করব।
যেসব মানুষ সবসময় সক্রিয় থাকে কিছু না কিছু নিয়ে, তারা যেকোন পরিবেশ পরিস্থিতিতে রোমাঞ্চকর বিভিন্ন মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দী করতে চান। হোক সেটা ঢাকার রাস্তায় ব্যস্ত ট্রাফিকের মধ্য দিয়ে বাইক চালিয়ে যাবার ভিডিও, আইসবোর্ডে স্কীয়িং কিংবা পাহাড়-পর্বতজয়ী এডভেঞ্চারের গল্প, প্রতিটি অ্যাকশন তাদের ফ্রেমে বন্দী করা চাইই। এই ধরণের তুমুল প্রতিযোগিতা, খেলাধুলা কিংবা বাইরে এডভেঞ্চারের জন্যে অ্যাকশন ক্যামেরার দক্ষতা সাধারণ ক্যামেরায় পাওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। এই ক্যামেরা গুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো উচ্চ রেসল্যুশনে যেকোনো গতিশীল নড়াচড়া তুলতে পারার জন্য। যদিও প্রকৃতপক্ষে অ্যাকশন ক্যামেরা তৈরি করা হয় বিশেষভাবে ভিডিওচিত্র ধারন করার জন্য, তবুও স্থিরচিত্র তোলার ব্যাপারেও এগুলোকে এক্সপার্ট বলা চলে। হাই রেসল্যুশনের ভিডিও ধারন করার ক্ষেত্রে অ্যাকশন ক্যামেরা সবার চেয়ে আলাদা।
এর কম্প্যাক্ট Design, ভাল Recording system, Waterproof হওয়ায় এবং এর সাথে আরো কিছু যন্ত্রাংশ যুক্ত করে এটিকে হেলমেট, শরিরের বিভিন্ন অংশে স্ট্র্যাপের সাহায্যে, সাইকেলের হ্যান্ডেল বারে বা অন্য কোন জায়গায় লাগিয়ে ছবি তোলা বা ভিডিও করা যায়। Waterproof case এর ফলে Action Camera কে Under Water এ ও ব্যবহার করা যায়। এতে Gyroscope থাকার কারণে নড়াচড়ার কারণে ছবির কোয়ালিটি নষ্ট হয়না। এই ক্যামেরাগুলোর Wide angle লেন্সের কারণে বেশ বড় এরিয়া জুড়ে ছবি নেয়া যায়।
এই ক্যামেরাগুলো কঠিন পরিবেশ পরিস্থিতিতে চিত্রধারন করতে সক্ষম, এমনকি পানির নিচেও। অতএব হিমশীতল পরিবেশে স্কীয়িং হোক বা পানির নিচে স্কুবা ডাইভিং, মরুভূমির কড়া উত্তাপ কিংবা কঠোর পাহাড়-পর্বত জয় করার মুহূর্ত, এই ক্যামেরায় আপনার যেকোনো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা ধারন করতে পারবেন! এগুলো এতটাই টেকসই আর মজবুত যে ১০ ফুট উচু থেকে পড়লেও এর কিছুই হবে না এবং একই সাথে এই ক্যামেরা ধূলা-ময়লা প্রতিরোধকও। তার মানে আপনি যে Action Camera নিয়ে কেবল ডুব সাঁতার দিতে পারবেন তাই নয়, এই ক্যামেরা কঠিন স্পোর্টস এর মাঝে পড়ে গিয়ে নষ্ট হওয়া কিংবা আঘাত পাওয়ার ঝামেলা থেকেও মুক্ত।
এবার বাজারে প্রচলিত কিছু কম দামের এবং ভালো ও উন্নত মানের কিছু Action Camera সম্মন্ধে জেনে নেওয়া যাক। প্রথমেই আসি কম দামি কিছু অ্যাকশন ক্যাম সম্মন্ধে।
4K Ultra HD action camera
এটি একটি চায়না নন-ব্র্যান্ড অ্যাকশন ক্যামেরা। প্রায় ৫৮গ্রাম ওজনের ছোট ক্যামেরা এটি। এতে 4k রেসল্যুশনের ইমেজ সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে 170° আলট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল গ্লাস লেন্স। ওয়াটার প্রুফ কভার ব্যবহার করে পানির নিচে ভিডিও করা যাবে। 1050mAh ব্যাটারিটি দিয়ে ৯০ মিনিট পর্যন্ত হাই-ডেফিনেশন ভিডিও করা যাবে। ক্যামেরায় LCD 2“ ডিসপ্লে রয়েছে। ক্যামেরাটি তিন থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে কেনা যাবে।
EKEN H9R
স্পেসিফিকেশনের দিক দিয়ে চায়না নন-ব্র্যান্ড অ্যাকশন ক্যাম টির মতো হলেও Eken ব্র্যান্ডের এই অ্যাকশন ক্যামটি কিছুটা উন্নত ডিজাইনে তৈরী। এই অ্যাকশন ক্যাম দিয়ে আপনি সর্বোচ্চ ১২ মেগাপিক্সেলে 4k রেসল্যুশনে ছবি বা ভিডিও ধারন করতে পারবেন। এছাড়া এই ক্যামেরাটির সাথে আপনি একটি 2.4G রিমোট পাবেন। পিছনে 2-inch LCD FHD ডিস্প্লে রয়েছে।
XIaomi Yi Action Cam
প্রায় ৭৭ গ্রাম ওজনের ছোট ক্যামেরা এটি। সনির ১৬ মেগাপিক্সেল ইমেজ সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে ১৫৫ ডিগ্রি আলট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল গ্লাস লেন্স। ওয়াটার প্রুফ কভার ব্যবহার করে পানির নিচে ভিডিও করা যাবে। কভারটি আলাদাভাবে কিনতে হবে। 1010mAh ব্যাটারিটি দিয়ে ৯০ মিনিট পর্যন্ত হাই-ডেফিনেশন ভিডিও করা যাবে। ক্যামেরায় কোনো ডিসপ্লে না থাকায় মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে সেটিং নির্ধারণ করতে হবে। ৬৪ জিবি পর্যন্ত মাইক্রো এসডি কার্ড ব্যবহার করা যাবে। ক্যামেরাটি ছয় থেকে সাত হাজার টাকার মধ্যে কেনা যাবে।
এবার জানা যাক নামি দামি কিছু অ্যাকশন ক্যাম ব্র্যান্ড সম্পর্কে।
XIaomi Yi 4k
ক্ষুদ্রাকৃতির এ ক্যামেরার ডিজাইন বেশ সাধারণ। সামনে একটু পাশে রয়েছে এর লেন্স, ওপরে শাটার বাটন, পেছনের পুরোটা জুড়ে টাচ স্ক্রিন। ডান পাশে রয়েছে চার্জিং পোর্ট ও মাইক্রো এসডি স্লট ও নিচে স্ক্রু মাউন্ট ও ব্যাটারি ডোর। ক্যামেরা ফিচারঃ ১৫৫ ডিগ্রি ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স, ১২ মেগাপিক্সেল সনি IMX ৩৭৭ সেন্সর, 4k 30fps, 1080p 120fps ও 720p 240fps পর্যন্ত ভিডিও করার সুবিধা। পিছনে ২.২ ইঞ্চি টাচ স্ক্রিন ডিসপ্লে রয়েছে। স্ট্যাবিলাইজেশন থাকার ফলে প্রতিটি ফুটেজেই কাঁপুনি নেই বললেই চলে। এক চার্জে টানা ৪৮ মিনিট ভিডিও ধারণ করতে পারে। ওয়াটারপ্রুফ নয় বলে পানির নিচে ইউজ করার জন্য ওয়াটারপ্রুফ কেস ইউজ করতে হবে। ক্যামেরা টি ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকায় কেনা যাবে।
3GoPro Hero 6
অ্যাকশন ক্যামেরা প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর মধ্যে GoPro একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের নাম। GoPro এর Hero 6 ইডিশন টা তে উন্নত ইলেকট্রোনিক স্টাবিলাইজেশন টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৬০ টি ফ্রেম নেয়া যাবে। এটি দিয়ে 4k মানের ভিডিও করা যাবে। অ্যাকশন ক্যামেরাটিতে 1080 pixel/240 fps এবং 2.7k/120 fps এর চিত্র ধারণ করা যাবে। ডিভাইসটিতে GP1 জিপ ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে করে উন্নত ছবি পাওয়া যায়। বিশেষ করে কম আলোতে। ক্যামেরাটিতে কানেকটিভিটির জন্য ওয়াইফাই রয়েছে। এতে ৫ গিগাহার্জ গতি পাওয়া যাবে। ক্যামেরটিতে 12mp jpg ছবি তোলা যাবে। ক্যামেরাটি ফুল ওয়াটারপ্রুফ তাই এতে এক্সট্রা কেস ইউজ করার প্রয়োজন নেই। ক্যামেরার তোলা ছবি দেখার জন্য এতে ২ ইঞ্চির এলসিডি টাচস্ক্রীন মনিটর রয়েছে। ক্যামেরাটির বাজার মূল্য প্রায় ৩৫-৪০ হাজার।