বর্তমানে তরুনদের মাঝে মোবাইল ফটোগ্রাফি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। মোবাইল ফোন সমূহের ভার্সেটাইল আকার ও ক্যামেরা চিপসের ক্রমাগত আধুনিকিকরণ এর প্রধাণ কারন। এরই সাথে তাল মিলিয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম এন্ড্রয়েডের জন্যে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে শত শত ফটোগ্রাফি রিলেটেড এপস। আজ আমরা এখানে সেগুলোর মধ্যে সেরা দশ Mobile Photography Apps নিয়ে আলোচনা করব। যেহেতু মোবাইল ফটোগ্রাফি এপস গুলো প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে, (ক্যামেরা এপস ও প্রসেসিং এপস) আমরা এখানে সেরা দশের তালিকাকে দুটি ভাগে ভাগ করেছি।
সেরা পাঁচ এনড্রয়েড ক্যামেরা এপসঃ যেমনটা আগেই বলেছিলাম শত শত মোবাইল ফটোগ্রাফি এপস তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত, এসবের সবগুলোই কিন্তু কার্যকরী নয়। আমরা এখানে সেরা পাঁচটি ক্যামেরা এপস জনপ্রিয়তা ও কার্যকারীতার ভিত্তিতে নির্বাচন করেছি। তবে সব এপস সব ফোনে একই ধরণের পারফরমেন্স দেয়না এটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
অন্যান্য ক্যামেরা এপ এর তুলনায় DSLR Camera Pro অনেক বেশি হালকা। ফাস্ট এক্সিকিউশন সুবিধা সম্বলিত এপটি মাত্র 400KB সাইজের। এই এপটির সব থেকে বড় এডভান্টেজ হল “ফোকাস লক” সুবিধা। বারবার অটো ফোকাস এডজাস্ট অনেক সময় বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়ায়, বিশেষ করে সল্প আলোতে। Pre-AF মোড দিয়ে খুব সহজেই এই এপে ফোকাস লক করা যায়। এছাড়াও সাইলেন্ট ক্লিক, বার্স্ট ক্যাপচার, মিটারিং মোড ইত্যাদি সহ আরো নানান প্রয়োজনীয় ফিচার রয়েছে এতে। তবে এই এপটির একমাত্র ডিসএডভানটেজ হল এতে কোন ভিডিও রেকর্ডিং সুবিধা নাই।
এই ক্যামেরা এপটি বর্তমানে সবথেকে বেশি ব্যাবহৃত থার্ড পার্টি ক্যামেরা এপ। এতে রয়েছে RAW ক্যাপচার থেকে শুরু করে Shutter Priority মোডের মত সব প্রোফেশনাল ফিচার। Camera API-2 ফার্মওয়্যার বিশিষ্ট্য এন্ড্রয়েড ফোনগুলোতে এই এপ দিয়ে ফোকাস, সাটার স্পিড সহ অন্যান্য প্যারামিটার ম্যানুয়ালি কন্ট্রোল করা যায়।
গুগলের এই ক্যামেরা এপটি ফাস্টনেসের জন্য বেশ জনপ্রিয়। এতে Photo Sphere, Panorama এর পাশাপাশি নতুন একটি গুরুত্বপূর্ন ফিচার রয়েছে, সেটি হল Lens Blur. এই ফিচারের মাধ্যমে সাবজেক্টের ব্যাকগ্রাউন্ডে একট্রা ব্লার (Bokeh) পাওয়া যাবে যেটা পোট্রেট ছবি গুলোকে দেবে অনেকটা প্রফেশনাল লুক। এই এপ দিয়ে নেক্সাস ডিভাইস গুলোতে 240fps পর্যন্ত স্লোমো ভিডিও ধারন করা যায়।
যারা শখের বসে মোবাইলে ছবি তোলেন তাদের জন্যে আরেকটি অসাধারণ ক্যামেরা এপ হল A Better Camera. 360 degrees to 100 MPix Panorama, Multishot: Group portrait, Sequence shot, Removing unwanted objects with one click, Video and photo time lapse, Pre-shot: pictures are taken before pressing, Burst and Expo-bracketing, RAW capture, Focus and expo metering by separate points, Manual controls ইত্যাদি সহ আরো অনেক প্রয়োজনিয় ফিচার রয়েছে এপটিতে।
সম্পূর্ন ফ্রি এই ক্যামেরা এপটিতে রয়েছে অটো স্ট্যাবিলাইজেশন সুবিধা, যা আপনাকে সাহায্য করবে ডিসটরশন ফ্রি ছবি তুলতে। ভয়েস রেকগনিশন সুবিধা থাকায় দূর হতে শব্দ করে ছবি তোলা যায় এপটি দিয়ে। এর ফাইল কমপ্রেশন সিস্টেম সত্যিই অসাধারণ। এছাড়াও ক্যামেরা এপটিতে রয়েছে ফুল ম্যানুয়াল কন্ট্রোল সুবিধা। Manual focus distance; manual ISO; manual exposure time (Experimental support for Android 5 Camera2 API)
- সেরা পাঁচ ফটো প্রসেসিং এপসঃ
ছবি তোলার পরেও ছবিকে সুন্দর করতে প্রায় সময়ই বেশিরভাগ ফটোগ্রাফাররা বিভিন্ন ধরনের প্রসেসিং প্রোগ্রাম ব্যাবহার করে থাকেন। মোবাইলে ফটগ্রাফারদের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ভিন্ন নয়। প্লে স্টরে থাকা হাজার হাজার ফটো-প্রসেসিং এপ থেকে আমরা এখানে সেরা পাঁচটি এপ নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
01. Photoshop Express:
বিখ্যাত গ্রাফিকস প্রতিষ্ঠান Adobe এর Photoshop Express এপটিতে রয়েছে ২০ টির অধিক প্রিসেট ইফেক্টস যা দিয়ে খুব সহজেই আপনার পছন্দমতো ফটো প্রসেস করতে পারবেন। এছাড়াও এক্সপোজার, হাইলাইটস, কালার, ক্ল্যারিটি ইতায়দি সব এডজাস্ট করা যাবে ম্যানুয়ালি।
02. Photoshop Touch:
যারা পিসিতে ফটোসপ ব্যাবহারে অভ্যস্ত তাদের জন্যে এটি একটি দারুন এপ। এতে ফটোসপের পিসি ভার্সনের মত অনেক কিছু ম্যানুয়ালি প্রসেস করা যায়। ব্রাশ, ইরেজার, স্পট হিলিং টুল, ম্যাজিক ওয়ান্ড টুল, টাইপ টুল, ক্লোন টুল সহ আরো নানান কিছু আপনাকে মোবাইল ফোনেই দেবে ফটোসপের স্বাদ।
03. Snapseed:
স্নাপসিড টেক জায়ান্ট গুগলের একটি এপ। Photoshop Express এর মতো এতেও মেজর এলিমেন্টগুলো ম্যানুয়ালি কন্ট্রোল করা যায়। বরং এতে HDR+, Perspective Alignmnet, Selective tool সহ আরো অনেক অতিরিক্ত প্রয়োজনিয় ফিচার রয়েছে।
04. Photomate R3:
ফটোমেট R3 তে রয়েছে ফটো-প্রসেসিং এর সব প্রফেশনাল ফিচার। এপটির সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এতে আপনি সরাসরি প্রসেস করতে পারবেন RAW ছবি সমূহ। প্রসেসিং এর পর ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত কোয়ালিটি বজায় থাকে।
এই এপটির ইন্টারফেস অনেক সরল।বহু প্রিসেট ইফেক্ট দিয়ে আপনি খুব সহজেই ছবিকে প্রোসেস করতে পারবেন।
ব্রাশ ও ব্লার টুল দিয়ে ম্যানুয়ালি ব্যাকগ্রাউন্ড চেঞ্জ করতে পারবেন।